মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন

হামাস নিষিদ্ধে ব্রিটেনের উদ্যোগে নিন্দা

স্বদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২১

স্বদেশ ডেস্ক:

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে সন্ত্রাসের দায়ে নিষিদ্ধে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এক উদ্যোগের নিন্দা জানিয়েছে সংগঠনটি।

এর আগে শুক্রবার ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল ব্রিটেনে হামাসকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণার জন্য পার্লামেন্টে প্রস্তাব উত্থাপন করার ঘোষণা দেন। এই প্রস্তাব অনুসারে দেশটিতে হামাসের প্রতি কেউ সমর্থন প্রকাশ করলে তাকে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হতে পারে।

এই সপ্তাহে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

এর প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক পাপের ক্ষমা প্রার্থনা ও সংশোধনের পরিবর্তে ব্রিটেন ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে আগ্রাসীদের সহায়তা করছে।’

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তৎকালীন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার বেলফোর ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য ‘জাতীয় আবাসভূমি’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘোষণা দেন। ‘বেলফোর ঘোষণা’ নামে পরিচিত ১৯১৭ সালের এই ঘোষণার মাধ্যমে ব্রিটেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের অধীন ফিলিস্তিনে বর্তমান ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ করে দেয় বলে অভিযোগ করা হয়।

হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সশস্ত্র প্রতিরোধসহ যেকোনো মাধ্যমে দখলদারের প্রতিরোধ করা দখলদারের অধীন জনগণের আন্তর্জাতিক আইনস্বীকৃত অধিকার।’

এতে আরো বলা হয়, ‘দখলদ্বারিত্বই হলো সন্ত্রাস। আদিবাসী জনগণকে হত্যা, শক্তির মাধ্যমে তাদের বাস্তুচ্যুত করা, তাদের ঘর গুড়িয়ে দেয়া এবং তাদের জেলখানায় নিক্ষেপ করাই হলো সন্ত্রাস।’

অপরদিকে হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জুহরি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ব্রিটেনের পদক্ষেপ ইসরাইলি দখলদারির পক্ষে সম্পূর্ণ পক্ষপাতিত্ব পূর্ণ এবং ইসরাইলি হুমকি ও নির্দেশনার কাছে আত্মসমর্পণমূলক।’

এদিকে তরুণ ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মী ও লেখক মোহাম্মদ আল-কুর্দ এক টুইট বার্তায় বলেন, “রাষ্ট্র ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ আইন ব্যবহার করে সহিংসতাকে আগে থেকেই কুক্ষিগত করেছে- যদি উর্দির মধ্যে ও চতুর আনুষ্ঠানিক ভাষ্যের সাহায্যে তা সম্পন্ন হয়, তবে এটি বৈধ। প্রীতি নিছক রাজনৈতিক চিন্তাকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে এই কূটকৌশলের বিপুল প্রয়োগ করছেন।’

 

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত।

এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘হামাস এক চরমপন্থী ইসলামী সংগঠন যাদের হামলার লক্ষ্য নিরাপরাধ ইসরাইলি এবং যারা ইসরাইলের ধ্বংস চায়। আমি ব্রিটেনের সীমানায় হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণার উদ্দেশ্যকে স্বাগত জানাই, কেননা তারাই তাই।’

এর আগে শুক্রবার সন্ত্রাসের দায়ে হামাসকে ব্রিটেনে নিষিদ্ধের প্রস্তাবের ঘোষণা দেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল।

যুক্তরাষ্ট্রে সফররত প্রীতি প্যাটেল হামাসকে ‘মৌলিক ও সহিংসভাবে ইহুদিবিরোধী’ হিসেবে উল্লেখ করেন। ব্রিটেনের ইহুদি সম্প্রদায়কে রক্ষার জন্যই এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলি দখলদারিত্ব প্রতিরোধে ১৯৮৭ সালে হামাস প্রতিষ্ঠিত হয়।

২০০৬ সালে ফিলিস্তিনে সাধারণ নির্বাচনে দলটি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল ফাতাহের সাথে দ্বন্দ্বের ফলে ইসরাইল নিয়ন্ত্রিত পশ্চিম তীর থেকে বহিস্কৃত হওয়ার পর দখলদার মুক্ত গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেয় হামাস। এর জেরে ২০০৭ সালে গাজার ওপর ইসরাইল অবরোধ শুরু করে।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার সাথে মোট চারবার যুদ্ধে জড়ায় ইসরাইল।

সূত্র : আলজাজিরা ও মিডল ইস্ট আই

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ